ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি লঙ্ঘন করে ইসরায়েলি বর্বর হামলার প্রতিবাদে সাতক্ষীরায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থী ও উপকূলীয় যুবরা। সোমবার (৭ এপ্রিল) বেলা ১১টায় শিক্ষার্থী-জনতার ব্যানারে সাতক্ষীরা শহরের খুলনা রোড মোড়স্থ শহীদ আসিফ চত্ত্বর থেকে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক দিয়ে অগ্রসর হয়ে নিউমার্কেট চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন তারা।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসন, নারী -শিশুসহ নিরীহ মানুষদের নির্বিচারে হত্যা, হাসপাতাল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস এক নির্মম গণহত্যার বাস্তবচিত্র। বিশ্বের বিবেকবান মানুষদের এই বর্বর ইসরাইলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে।
বক্তারা আরো বলেন, গণহত্যার জন্য ইসরাইল ও নেতানিয়াহু সরকারের বিচার করতে হবে। একই সাথে ইসরায়েলের সকল পণ্য বয়কট করতে হবে। সৌদি আরবসহ বিশ্বের সকল মুসলিম দেশগুলোকে এক হয়ে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র পুনঃগঠনে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ইসরাইলকে তার উপযুক্ত জবাব দিতে হবে।
বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে জাতিসংঘসহ সকল রাষ্ট্রকে অসহায় ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়। এসময় বিক্ষোভ সমাবেশে অংশগ্রহণকারি সাতক্ষীরার হাজার হাজার জনগণ ইসরাইলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকেন।
এদিকে শ্যামনগর উপজেলা যুব স্বেচ্ছাসেবী সমন্বয় কমিটির সহযোগিতায় পৃথক প্রতিবাদ ধর্মঘট ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে স্থানীয় যুব স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সুন্দরবন স্টুডেন্ট সলিডারিটি টিম। উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের কলবাড়ী বাজার থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে নিউ যমুনা শ্রীম্প হ্যাচারির সামনে গিয়ে ধর্মঘটে যোগ দেয়।
ধর্মঘটে যুব জলবায়ু যোদ্ধা স.ম ওসমান গনী সোহাগ এর সঞ্চালনায় অংশ নেন লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ, উন্নয়নকর্মী সৈয়দ আলী বিশ্বাস, নগর বিশেষজ্ঞ মো. জাহাঙ্গীর আলম, এনজিও কর্মী রামকৃষ্ণ জোয়ারদার, গাজী মাহিদা মিজান, সিডিও’র নির্বাহী পরিচালক গাজী আল ইমরান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সাম্রাজ্যবাদী ও ইহুদিবাদী শক্তিগুলো ফিলিস্তিনকে উন্মুক্ত কারাগারে পরিণত করেছে। সেখানে নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে। বোমা হামলায় রক্ত ঝরছে নিরীহ মানুষের। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে বিশ্ব আর বসবাসের উপযোগী থাকবে না। আমরা ইসরায়েলের বর্বরতা ও তাদের সহযোগী সাম্রাজ্যবাদী শক্তির প্রতি তীব্র নিন্দা জানাই।
বক্তারা আরও বলেন, ফিলিস্তিনে ছোট ছোট শিশু ও সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে। এই নির্মমতা আমাদের বিবেককে নাড়া দেয়, কিন্তু বিশ্ব বিবেক যেন নির্বিকার। সভ্যতার নামে যারা আমাদের নীতিকথা শোনায়, তারা ফিলিস্তিনের পক্ষে কেন কথা বলে না? এই প্রশ্ন আজও রয়ে যায়। দখলদার রাষ্ট্র ইসরায়েল ক্রমাগত ফিলিস্তিনকে কোণঠাসা করছে।
খুলনা বিএল কলেজের শিক্ষার্থী মো. আবু ইছা বলেন, যদি এই নিপীড়ন চলতে থাকে, তবে কয়েক বছরের মধ্যেই ফিলিস্তিন বিশ্ব মানচিত্র থেকে মুছে যেতে পারে। আমরা ফিলিস্তিনের পক্ষে দাঁড়িয়েছি এবং ন্যায়সংগত অধিকার না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের এই প্রতিবাদ চলবে।
খুলনা গেজেট/এএজে